Top

Welcome To Official Website Of Aid For Men

বাংলাদেশে ইতিহাসে কখনোই নারীদের ফাসি দেওয়া হয়নি। কেন হয়নি? কি কারন গুলো?

বাংলাদেশে ইতিহাসে কখনোই নারীদের ফাসি দেওয়া হয়নি। কেন হয়নি? কি কারন গুলো?

By: Shawon Ahmed (Desk) || Date: 18 Oct 20

ফাঁসি নিয়ে মানুষের মনে আগ্রহ আর ভয় কিন্তু কম নেই। বাংলাদেশের আইনে গুরুতর অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হলো ফাঁসি। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হলো বাংলাদেশে এখন পযর্ন্ত কোন নারী অপরাধীর ফাঁসি হয়নি। এই বিষয়েই বিস্তারিত তথ্য দেব আজ আপনাদের।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। তখন থেকে আজ পযর্ন্ত নানা অপরাধে অনেক আসামিকে ফাঁসির রায় দিয়েছে নিম্ন ও উচ্চ আদালত। ২০১৭ সালের তথ্য মতে এ পর্যন্ত ৪৪৮ জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে বাংলাদেশে। সর্বশেষ ১২ এপ্রিল ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।দেখা গেছে স্বাধীনতার পর থেকে এ যাবৎ কালে যত জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে তারা সকলেই পুরুষ।
কোন নারী নেই, হ্যাঁ আপনি ঠিক শুনছেন। বাংলাদেশের ইতিহাস এখন পর্জন্ত কোন নারী আসামিকেই ফাঁসি দেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশে কোনো নারীর ফাসি হয়নি শিরোনামে কালের কন্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়।
এক হিসাবে দেখা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে শতাধিক নারীর ফাঁসির আদেশ হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো নারীর ফাঁসি কার্যকর হয়নি। তাদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘদিন কারাভোগ করার পর বেরিয়ে গেছে, কেউ কেউ মারা গেছে, কারো কারো আপিলে শাস্তি কমেছে। বর্তমানে যারা কনডেম সেলে আছে তাদের করা আপিল আদালতেই ঝুলে রয়েছে। নিয়মানুযায়ী ফাঁসির আসামিরা সর্বশেষ সুযোগ হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারে। রাষ্ট্রপতি তাদের ক্ষমা না করলে ফাঁসি থেকে বাঁচার কোনো সুযোগ নেই। তবে আজ পর্যন্ত কোনো নারীর আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে গেছে এমন নজির নেই বলে জানা গেছে। একজন ঊর্ধ্বতন কারা কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, আমার জানা মতে এখন পর্যন্ত ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো নারীর আবেদন ক্ষমা প্রার্থনার জন্য রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত যায়নি। তাদের মামলার বেশির ভাগের কাগজপত্র আদালতের আপিল বিভাগে আটকে আছে।
২০০৭ সালে কাশিমপুরে একমাত্র মহিলা কারাগার উদ্বোধন করা হয়। দেশের প্রতিটি কারাগারে ফাঁসির মঞ্চ থাকলেও সেখানে কোনো মঞ্চ নেই। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাবেক আইজি প্রিজন্স ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাকির হাসানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানিয়েছিলেন, অতীতে কোনো নারী আসামির ফাঁসির রেকর্ড না থাকায় ফাঁসির মঞ্চ বানানো হয়নি।
২০১৮ সালের দৈনিক জনকণ্ঠ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী,
কারাগার সূত্র জানায়, সর্বোচ্চ আদালতের আপীল বিভাগে গেলেই নারী আসামির ফাঁসির দন্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দন্ড দেয়ায় ফাঁসির দন্ড থেকে বেঁচে যায় অনেক নারী। সর্বশেষ শিল্পপতি লতিফুর রহমানের কন্যা শাজনীন হত্যার ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামি এস্তেমা খাতুন মিনুর ফাঁসির দন্ড মওকুফ করে যাবজ্জীবন দন্ড দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
কারাগার সূত্র জানায়, শিল্পপতি লতিফুর রহমানের কন্যা শাজনীন হত্যার ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামি এস্তেমা খাতুনের ফাঁসির দন্ড কমিয়ে দেয়ার আগে পুলিশ কর্মকর্তা বাবা ও মা হত্যাকান্ডর দায়ে মেয়ে ঐশীর ফাঁসির দন্ড মওকুফ করে যাবজ্জীবন দন্ড দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
দেশের বিভিন্ন কারাগারের কনডেম সেলে ৩৮ জন মহিলা ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামির মধ্যে কাসিমপুর মহিলা কারাগারে ১৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯ জন, সিলেটে ১ জন, রংপুরে ৩ জন, খুলনায় ৭ জন, বরিশালে ২ জন ও ময়মনসিংহে ১ জন আসামি রয়েছে। নিম্নে আদালত থেকে এদের ফাঁসির রায় হওয়ার পর থেকে এরা আছে কনডেম সেলে। এদের মধ্যে অনেকেই উচ্চ আদালতে আপীল করেছে। আবার কেউ কেউ নানা সীমাবদ্ধতার কারণে আপীল করতে পারে নি।
কেন্দ্রীয় কারাগারের একজন কর্মকর্তা বলেন, দেশের বিভিন্ন কারাগারে রাজনীতিক, সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তা, আইনজীবী চিকিৎসকসহ সহস্রাধিক ফাঁসির আসামি রয়েছে কনডেম সেলে, যাদের অনেকেরই ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। নারীদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে নিম্ন আদালত ফাঁসির রায় দিলে এক পর্যায়ে উচ্চ আদালত থেকে মহিলার ক্ষেত্রে দন্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন বা আমৃত্যু কারাদন্ড দেয়া হয়ে থাকে। সুতরাং আদালতের নির্দেশনার কারণেই কোন নারীর ফাঁসি দন্ড কার্যকর করা হয়নি। ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত মহিলা বা পুরুষ যাই হোক না কেন, তাদেরকে কনডেম সেলেই থাকতে হয়।